Sunday, September 15, 2013

প্রকল্প শেষের পথে, মেয়াদ বাড়িয়েও বহু জায়গায় শুরুই করা গেল না কাজ

প্রকল্প শেষের পথে, মেয়াদ বাড়িয়েও বহু জায়গায় শুরুই করা গেল না কাজ

প্রকল্প শেষের পথে, মেয়াদ বাড়িয়েও বহু জায়গায় শুরুই করা গেল না কাজ
কৌশিক সরকার


সময়ের কাজ সময়ে না করার খেসারত! 

জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশনের (জেএনএনইউআরএম) কাজকর্ম গুটিয়ে নেওয়ার তোড়জোড় চলছে দিল্লিতে৷ মেয়াদ দু'বছর বাড়িয়ে প্রকল্পে ইতি টানার নির্ধারিত সময় ২০১৪-র মার্চ৷ অথচ এ রাজ্যে প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কাজের গতিবিধি দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে সে সব দিনের আলো দেখবে না৷ অতএব, কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হওয়া ছাড়া গতি কী? নগরোন্নয়ন দপ্তরের আশা, অনুমোদিত ও শুরু হওয়া প্রকল্পগুলি নিশ্চয়ই চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে কেন্দ্র৷ অর্থাত্‍, সেই কেন্দ্রীয় অনুমোদনের অপেক্ষা এবং উপেক্ষার অনুযোগের রাস্তা প্রশস্ত হওয়া৷ 

কী অবস্থায় রয়েছে রাজ্যের প্রকল্পগুলি? যানজট এড়িয়ে কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে পৌঁছনোর লক্ষ্যে বছর পাঁচেক আগে হাওড়া থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুলের প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছিল৷ ২০০৮ সাল থেকে কাজ এগিয়েছে মাত্র ৬২ শতাংশ৷ পরমা আইল্যান্ড থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত উড়ালপুলের কাজও কমবেশি ৬০ শতাংশ পেরিয়েছে৷ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে অনুমোদিত প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের অগস্টে৷ ২০১০ সালে অনুমোদিত কেষ্টপুর-জোড়া মন্দির পর্যন্ত এলিভেটেড করিডরের সিকি ভাগ কাজ হয়েছে৷ বছর দেড়েক আগে ইস্টার্ন বাইপাসে কামালগাজির কাছে অনুমোদিত ফোর লেন ফ্লাইওভারের কাজ এগিয়েছে ১১ শতাংশ৷ প্রায় একই সময়ে অনুমোদিত নবদিগন্ত টাউনশিপের কাছে নতুন বাস টার্মিনাসের কাজই শুরু হয়নি৷ বেহাল ধাপা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এলাকায় কম্প্রেহেনসিভ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের প্রকল্পটিও৷ ২০০৯-এর এপ্রিলে অনুমোদিত হলেও, কাজ এগিয়েছে মাত্র দু'শতাংশ৷ 

সামগ্রিক ভাবে কলকাতায় প্রকল্পগুলির অগ্রগতির হার ৫০ শতাংশ হলেও, আসানসোলে বিভিন্ন প্রকল্পে অগ্রগতির হার ৩৮ শতাংশ৷ ডজনখানেক প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি৷ এদিকে হাতে রয়েছে বছর দেড়েক৷ এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা একপ্রকার অসম্ভব, তা মানছেন প্রশাসনের কর্তারাই৷ ২০০৫ সালে সাত বছরের প্রকল্পটি ঘোষণা করেছিল প্রথম ইউপিএ সরকার৷ ২০১২-র মার্চে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল৷ পরে তা দু'বছর বাড়িয়ে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত করা হয়৷ 

বঞ্চনার অভিযোগে কেন্দ্রকে একাধিকবার বিদ্ধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্ত্ত তথ্য বলছে, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজ্যকে দিয়েছে দিল্লি৷ তা হলে কেন এই অবস্থা? প্রকল্পের জন্মলগ্নে কিছু শর্ত ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল৷ সেই শর্ত ছিল সংস্কারের, যার কয়েকটি নিয়ে তত্‍কালীন বাম সরকার তো বটেই, বিরোধী তৃণমূলেরও আপত্তি ছিল৷ আশঙ্কা করা হয়েছিল, সংস্কারের সেই শর্ত না-মানলে নতুন প্রকল্পের অনুমোদন পাবে না রাজ্য, ব্যাহত হবে নগরোন্নয়ন৷ যদিও শেষ পর্যন্ত সংস্কারের শর্ত বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি৷ বরং, অনেক ক্ষেত্রে জমির সমস্যা বা সময়মতো নির্ভুল ডিপিআর জমা না-দেওয়ায় বাধা পেয়েছে কাজ৷ সরকারে এসেই যে কারণে সময়মতো ডিপিআর তৈরি এবং দিল্লিতে প্রকল্প অনুমোদনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ কিন্ত্ত তাতেও যে কাজ হয়নি, তা স্পষ্ট কেন্দ্রের তথ্যেই৷ 

No comments:

Post a Comment