গুন্ডামি সহ্য হবে না, মিছিলে বার্তা ছাত্রী ও অভিভাবকদের
জয় সাহা ও পল্লব ভট্টাচার্য
৪৮ ঘণ্টা আগে এক প্রতিবাদের অছিলায় ভেঙেচুরে তছনছ করে দেওয়া হয়েছিল দমদম মল রোডের শতাব্দী প্রাচীন ক্রাইস্ট চার্চ স্কুল৷ শনিবার এক শ্রেণির অভিভাবক এবং বহিরাগতের সেই গুন্ডামির প্রতিবাদে পথে নামলেন সেই স্কুলেরই বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্রীরা৷ তাতে সামিল হলেন অভিভাবকেরাও৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কখনও স্কুলের সামনে প্রতিবাদ সভা, কখনও মোমবাতি মিছিল করে ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা বুঝিয়ে দিলেন, এই গুন্ডামি আর সহ্য করা হবে না৷ প্রতিবাদীদের মূল দাবি ছিল, অবিলম্বে স্কুল খুলতে হবে, ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, অধ্যক্ষা হেলেন সরকারকে মুক্তি দিতে হবে৷ শনিবার সাতসকালে যখন স্কুলের সামনে অভিভাবকদের সামনেই ছাত্রীরা ওই দিনের তাণ্ডবের প্রতিবাদে গলা ফাটাচ্ছিল, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে ভাঙচুরে জড়িত তিন জনকে৷ তাদের মধ্যে দু'জন অভিভাবক, এক জন বহিরাগত বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ ছাত্রী এবং অভিভাবকদের দাবি, সেদিন অভিভাবকদের নাম করে বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই স্কুলে তাণ্ডব চালিয়েছে৷
ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে গুন্ডামির নিন্দায় এ দিনও সরব ছিল বিভিন্ন মহল৷ দক্ষিণ কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও স্কুলে ভাঙচুরের কড়া নিন্দা করে বলেন, 'আমি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছি৷ যদি অভিভাবকেরাই এরকম আচরণ করেন, তবে তাঁদের কাছ থেকে ছেলেমেয়েরা কী শিখবে?' ওই দিন পুলিশের সামনেই অবাধে তাণ্ডব চলেছে স্কুলে৷ পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে৷ যদিও পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশি ব্যর্থতা সম্পর্কে রাজ্যপাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷
এই রাজ্যের প্রাক্তনীদের পাশাপাশি ভিন্ রাজ্য, এমনকি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রীরাও ওই তাণ্ডবের প্রতিবাদ করেছেন৷ এ দিন টরন্টো থেকে মীনাক্ষী দত্ত, সিডনি থেকে ইন্দ্রাণী দত্ত, মুম্বইয়ের শ্রেয়সী সেন, দুবাইয়ের মণিদীপা দাসের মতো অনেক প্রাক্তনী এক চিঠিতে ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন৷ পাশাপাশি, স্কুলে ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন৷
এ দিন সকালে যেমন স্কুলের বন্ধ গেটের সামনে ছাত্রী-অভিভাবকদের বিশাল সভা হয়েছে, তেমনি বিকেলে স্কুল লাগোয়া রাস্তা থেকেই বের হয় বিশাল মৌন মিছিল৷ তাতে ছাত্রীদের পাশাপাশি যোগ দেন অভিভাবকেরা, ছিলেন স্কুলের অনেক প্রাক্তনীও৷ মিছিলকারীদের কারও হাতে ছিল, 'প্রতিবাদের ভাষা ভাঙচুর নয়', কারও হাতে ছিল, 'ভাঙচুরে জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই', আবার কারও হাতে ছিল, 'অধ্যক্ষার মুক্তি চাই' লেখা প্ল্যাকার্ড৷ মিছিলে কোনও স্লোগান ছিল না বটে৷ কিন্ত্ত সেই মৌন মিছিলের মেজাজ ছিল তেজি৷ বিকেলের সেই মিছিল স্কুলের সামনে থেকে সন্ধ্যায় গিয়ে পৌঁছয় বাগুইআটিতে ঐন্দ্রিলার দাসের বাড়িতে, যার মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই গত দু'দিন ধরে উত্তাল প্রায় গোটা রাজ্য৷ সেখানে ঐন্দ্রিলার সহপাঠীরা তো বটেই, অন্য ছাত্রীরা ওর ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করে প্রিয় সতীর্থকে৷ তাদের অনেককেই ঐন্দ্রিলার ছবির দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা গিয়েছে৷ মেয়ের সহপাঠীদের এই বিহ্বলতা দেখে নির্বাক হয়ে যান ঐন্দ্রিলার বাবা-মা৷ সেখানে ছাত্রীরা সমবেত কন্ঠে স্কুলের প্রার্থনা সঙ্গীতও গায়৷
সকালে অবশ্য স্কুলের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ সকাল থেকেই স্কুল লাগোয়া রাস্তায় জমায়েত হতে থাকেন ছাত্রী ও অভিভাবকেরা৷ একটি সভাও হয় সেখানে৷ ওই সভাতেই তৈরি হয় ১৫ জন সদস্যের গার্ডিয়ানস ফোরাম৷ দমদম পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফাল্গুনী পুরকায়স্থ সভা মঞ্চে উঠে ভাষণ দিতে গেলে, তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন কয়েকজন৷ তাঁকে ঘাড় ধরে নামিয়েও দেন তাঁরা৷ কাউন্সিলরের সঙ্গে এই ব্যবহার কেন? অভিভাবকদের যুক্তি, রাজনীতিমুক্ত আন্দোলনই কাঙ্খিত৷ স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ মুখোপাধ্যায়কে এ দিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে 'গো-ব্যাক' স্লোগান তুলতে দেখা যায়৷ যদিও তিনি অভিভাবক নন৷ তা হলে অভিভাবকদের সভায় কী করছিলেন পার্থবাবু? তাঁর উত্তর, 'আমি স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে এসেছি৷ বৃহস্পতিবারও ছিলাম৷ কাউন্সিলরকে সেদিন কোনও ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি৷ তাই আমি অভিভাবকদের হয়ে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছি৷' ফাল্গুনীবাবুর প্রতিক্রিয়া, 'যারা আমায় হেনস্থা করেছে, তারা কেউ অভিভাবক নন৷ তৃণমূলের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে আমাকে অপমান করেছে৷ এই সভার আয়োজন করতে আমাকে অভিভাবকেরাই বলেছিলেন৷ আমাকে আমন্ত্রণপত্রও দেওয়া হয়েছিল৷'
৪৮ ঘণ্টা পর ভাঙচুরের ঘটনায় যে তিন জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, তাঁরা হলেন, গোলাম মহন্মদ (৩৫), ধীরেন রাজবংশী (৪০) এবং বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী (৩৫)৷ এর মধ্যে গোলাম মহম্মদ বহিরাগত৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, গোলাম মহম্মদ দমদমের একটি মাংসের দোকানের কর্মচারী৷ ওই স্কুলের সঙ্গে কস্মিনকালেও তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ তবে ধীরেন রাজবংশী এবং বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী অভিভাবক বলে পুলিশ খবর পেয়েছে৷ শনিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে৷ কিন্ত্ত সেদিনের তাণ্ডবের মূল কুশীলবরা এখনও অধরা৷ ব্যারাকপুরের ডিসি ডিডি দেবাশিস বেজ বলেন, 'এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করা হবে৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে৷'
স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী সায়ন্তী বিশ্বাস বলে, 'ঐন্দ্রিলার সঙ্গে যা হয়েছে তা আমাদের সঙ্গে ঘটলে আমাদের অভিভাবকেরাও স্বাভাবিক কারণে রেগে যেতেন৷ কিন্ত্ত তা বলে যে ভাবে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, আমাদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না৷ আমাদের স্থির বিশ্বাস, এমন ঘটনা আমাদের বাবা-মায়েরা ঘটাতে পারেন না৷ এটা বহিরাগতদের কীর্তি৷' সায়ন্তীর কথায় সায় দেয় আরও অনেক ছাত্রী৷ তাদের চিত্কারে কান পাতা দায় হয়ে পড়ছিল৷ গার্ডিয়ান ফোরামের সদস্যা ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীর মা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা চাই হেলেনদেবীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক৷ একদল গুন্ডার তাণ্ডবের জন্য আমাদের মেয়েদের ভবিষ্যত্ কেন নষ্ট হবে? স্কুল খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রশাসনকে নিতে হবে৷'
৪৮ ঘণ্টা আগে এক প্রতিবাদের অছিলায় ভেঙেচুরে তছনছ করে দেওয়া হয়েছিল দমদম মল রোডের শতাব্দী প্রাচীন ক্রাইস্ট চার্চ স্কুল৷ শনিবার এক শ্রেণির অভিভাবক এবং বহিরাগতের সেই গুন্ডামির প্রতিবাদে পথে নামলেন সেই স্কুলেরই বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্রীরা৷ তাতে সামিল হলেন অভিভাবকেরাও৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কখনও স্কুলের সামনে প্রতিবাদ সভা, কখনও মোমবাতি মিছিল করে ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা বুঝিয়ে দিলেন, এই গুন্ডামি আর সহ্য করা হবে না৷ প্রতিবাদীদের মূল দাবি ছিল, অবিলম্বে স্কুল খুলতে হবে, ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, অধ্যক্ষা হেলেন সরকারকে মুক্তি দিতে হবে৷ শনিবার সাতসকালে যখন স্কুলের সামনে অভিভাবকদের সামনেই ছাত্রীরা ওই দিনের তাণ্ডবের প্রতিবাদে গলা ফাটাচ্ছিল, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে ভাঙচুরে জড়িত তিন জনকে৷ তাদের মধ্যে দু'জন অভিভাবক, এক জন বহিরাগত বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ ছাত্রী এবং অভিভাবকদের দাবি, সেদিন অভিভাবকদের নাম করে বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই স্কুলে তাণ্ডব চালিয়েছে৷
ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে গুন্ডামির নিন্দায় এ দিনও সরব ছিল বিভিন্ন মহল৷ দক্ষিণ কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও স্কুলে ভাঙচুরের কড়া নিন্দা করে বলেন, 'আমি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছি৷ যদি অভিভাবকেরাই এরকম আচরণ করেন, তবে তাঁদের কাছ থেকে ছেলেমেয়েরা কী শিখবে?' ওই দিন পুলিশের সামনেই অবাধে তাণ্ডব চলেছে স্কুলে৷ পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে৷ যদিও পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশি ব্যর্থতা সম্পর্কে রাজ্যপাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷
এই রাজ্যের প্রাক্তনীদের পাশাপাশি ভিন্ রাজ্য, এমনকি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রীরাও ওই তাণ্ডবের প্রতিবাদ করেছেন৷ এ দিন টরন্টো থেকে মীনাক্ষী দত্ত, সিডনি থেকে ইন্দ্রাণী দত্ত, মুম্বইয়ের শ্রেয়সী সেন, দুবাইয়ের মণিদীপা দাসের মতো অনেক প্রাক্তনী এক চিঠিতে ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন৷ পাশাপাশি, স্কুলে ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন৷
এ দিন সকালে যেমন স্কুলের বন্ধ গেটের সামনে ছাত্রী-অভিভাবকদের বিশাল সভা হয়েছে, তেমনি বিকেলে স্কুল লাগোয়া রাস্তা থেকেই বের হয় বিশাল মৌন মিছিল৷ তাতে ছাত্রীদের পাশাপাশি যোগ দেন অভিভাবকেরা, ছিলেন স্কুলের অনেক প্রাক্তনীও৷ মিছিলকারীদের কারও হাতে ছিল, 'প্রতিবাদের ভাষা ভাঙচুর নয়', কারও হাতে ছিল, 'ভাঙচুরে জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই', আবার কারও হাতে ছিল, 'অধ্যক্ষার মুক্তি চাই' লেখা প্ল্যাকার্ড৷ মিছিলে কোনও স্লোগান ছিল না বটে৷ কিন্ত্ত সেই মৌন মিছিলের মেজাজ ছিল তেজি৷ বিকেলের সেই মিছিল স্কুলের সামনে থেকে সন্ধ্যায় গিয়ে পৌঁছয় বাগুইআটিতে ঐন্দ্রিলার দাসের বাড়িতে, যার মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই গত দু'দিন ধরে উত্তাল প্রায় গোটা রাজ্য৷ সেখানে ঐন্দ্রিলার সহপাঠীরা তো বটেই, অন্য ছাত্রীরা ওর ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করে প্রিয় সতীর্থকে৷ তাদের অনেককেই ঐন্দ্রিলার ছবির দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা গিয়েছে৷ মেয়ের সহপাঠীদের এই বিহ্বলতা দেখে নির্বাক হয়ে যান ঐন্দ্রিলার বাবা-মা৷ সেখানে ছাত্রীরা সমবেত কন্ঠে স্কুলের প্রার্থনা সঙ্গীতও গায়৷
সকালে অবশ্য স্কুলের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ সকাল থেকেই স্কুল লাগোয়া রাস্তায় জমায়েত হতে থাকেন ছাত্রী ও অভিভাবকেরা৷ একটি সভাও হয় সেখানে৷ ওই সভাতেই তৈরি হয় ১৫ জন সদস্যের গার্ডিয়ানস ফোরাম৷ দমদম পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফাল্গুনী পুরকায়স্থ সভা মঞ্চে উঠে ভাষণ দিতে গেলে, তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন কয়েকজন৷ তাঁকে ঘাড় ধরে নামিয়েও দেন তাঁরা৷ কাউন্সিলরের সঙ্গে এই ব্যবহার কেন? অভিভাবকদের যুক্তি, রাজনীতিমুক্ত আন্দোলনই কাঙ্খিত৷ স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ মুখোপাধ্যায়কে এ দিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে 'গো-ব্যাক' স্লোগান তুলতে দেখা যায়৷ যদিও তিনি অভিভাবক নন৷ তা হলে অভিভাবকদের সভায় কী করছিলেন পার্থবাবু? তাঁর উত্তর, 'আমি স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে এসেছি৷ বৃহস্পতিবারও ছিলাম৷ কাউন্সিলরকে সেদিন কোনও ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি৷ তাই আমি অভিভাবকদের হয়ে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছি৷' ফাল্গুনীবাবুর প্রতিক্রিয়া, 'যারা আমায় হেনস্থা করেছে, তারা কেউ অভিভাবক নন৷ তৃণমূলের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে আমাকে অপমান করেছে৷ এই সভার আয়োজন করতে আমাকে অভিভাবকেরাই বলেছিলেন৷ আমাকে আমন্ত্রণপত্রও দেওয়া হয়েছিল৷'
৪৮ ঘণ্টা পর ভাঙচুরের ঘটনায় যে তিন জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, তাঁরা হলেন, গোলাম মহন্মদ (৩৫), ধীরেন রাজবংশী (৪০) এবং বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী (৩৫)৷ এর মধ্যে গোলাম মহম্মদ বহিরাগত৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, গোলাম মহম্মদ দমদমের একটি মাংসের দোকানের কর্মচারী৷ ওই স্কুলের সঙ্গে কস্মিনকালেও তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ তবে ধীরেন রাজবংশী এবং বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী অভিভাবক বলে পুলিশ খবর পেয়েছে৷ শনিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে৷ কিন্ত্ত সেদিনের তাণ্ডবের মূল কুশীলবরা এখনও অধরা৷ ব্যারাকপুরের ডিসি ডিডি দেবাশিস বেজ বলেন, 'এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করা হবে৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে৷'
স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী সায়ন্তী বিশ্বাস বলে, 'ঐন্দ্রিলার সঙ্গে যা হয়েছে তা আমাদের সঙ্গে ঘটলে আমাদের অভিভাবকেরাও স্বাভাবিক কারণে রেগে যেতেন৷ কিন্ত্ত তা বলে যে ভাবে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, আমাদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না৷ আমাদের স্থির বিশ্বাস, এমন ঘটনা আমাদের বাবা-মায়েরা ঘটাতে পারেন না৷ এটা বহিরাগতদের কীর্তি৷' সায়ন্তীর কথায় সায় দেয় আরও অনেক ছাত্রী৷ তাদের চিত্কারে কান পাতা দায় হয়ে পড়ছিল৷ গার্ডিয়ান ফোরামের সদস্যা ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীর মা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা চাই হেলেনদেবীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক৷ একদল গুন্ডার তাণ্ডবের জন্য আমাদের মেয়েদের ভবিষ্যত্ কেন নষ্ট হবে? স্কুল খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রশাসনকে নিতে হবে৷'
No comments:
Post a Comment