Sunday, July 17, 2016

মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে5 ই আগস্ট কোলকাতায় মিছিল ও বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশান বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ এবং ভারতবর্ষও নিরাপদ নয়,মানুষ নিরাপদ নয়,সব মানুষই এখন উদবাস্তু! বাংলাদেশ থেকে দু কোটি 39 লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষের ঢল নামতে চলেছে ভারতবর্ষে এবং পরিস্থিতি ক্রমশঃ রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মনুষত্বের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে! ইজরায়েলর মত বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য অনিবার্য

মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে 5 ই আগস্ট কোলকাতায় মিছিল ও বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশান
বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ এবং ভারতবর্ষও নিরাপদ নয়,মানুষ নিরাপদ নয়,সব মানুষই এখন উদবাস্তু!
বাংলাদেশ থেকে দু কোটি 39 লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষের ঢল নামতে চলেছে ভারতবর্ষে এবং পরিস্থিতি ক্রমশঃ রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মনুষত্বের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে!
ইজরায়েলর মত বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য অনিবার্য হোমল্যান্ডের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে,আমরা কি চাই?
ধর্ম জাতি রাজনীতির উর্দ্ধে সংযত উদ্বাস্তু আন্দোলন সংগঠিত করা বেঁচে থাকার একমাত্র রাস্তা!
পলাশ বিশ্বাস
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গুলশান হামলার আগে এ বিষয়ে সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে ছিল। গোয়েন্দা তথ্য ছিল, গুলশান এলাকায় কিছু একটা ঘটতে পারে। এ কারণে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। এর পেছনে কারা, কারা এদের মদদ দিয়েছে, তা আমাদের জানা আছে।’---বাংলা ট্রিবিউন

ঢাকায় 20 টি স্থানে জঙ্গী হামলার আশন্কা।ঠাকার বাইরে যে কোনো স্থানে এবং পশ্চিম বাংলা কি আসামেও চলতে পারে অবাধ স্নত্রাস যেহেতু ক্রমশঃ পরিস্থিতি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রমের বাইরে চলে যাচ্ছে!

শেখ হাসিনা সরকারের দাবি গুলশান হামলার যাবতীয়ত্থ্য তাঁদের জানা ছিল!

তবু তাঁরা কিছুতেই আচকাতে পারছেন না অবাধ হত্যালীলা,ঘর্ষণ তান্ডব!

ঠাকার বাইরে হামলার পূর্বাভাস নেই,যেমন ছিল না গুলশানেরও!সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয়ঐক্যের দাবি বাংলাদেশেই অস্বীকৃত,আমাদেরই রক্ত মাংশের অংশীদার যারা,তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে না ভাবলে এই বাংলায়,এই ভারতবর্ষে আমাদের নিরাপত্তার কি হবে!

সংখ্যালঘুদের হত্যা লীলা চলছে।
চলছে ধর্ষণ।

রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থে সফ্ট টারগেট সংখ্যালঘুরাই।
রাজনৈতিক অস্থিরতার বলি আবার সেই সংখ্যালঘুরা।

ভরতবর্ষ ও পৃথীবীর বিভিন্ন দেশের ঘটনাবলির প্রতিক্রিযার বলিও সংখ্যালঘুরা।
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অবসান না হলে,হত্যালীলা ও ধর্ষণ মহোত্সবের শেষ না হলে কতদিন প্রযন্ত বাংলাদেশে থাকতে পারবেন সংখ্যালঘুরা?
সংখ্যালঘুরা তল্পিল্পা নিয়ে কাঁটাতারের এপারে চলে এলে বাংলা,আসমাম ও বাকী ভারতবর্ষের কি হবে ?
এই পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্যই মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে 5 ই আগস্ট কোলকাতায় মিছিল ও বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশান!আসুন সবাই পথে নামি!বাঁচার ঠিকানা মিলবে পথেই!

ভারতবর্ষের ভূগোল আর ইতিহাস বার বার বদল হয়েছে।ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই আমরা বুঝতে পারি যে পৃথীবীর সমস্ত প্রাচীন সভ্যতা ধ্বংস হলেও ভারতে সবসময় বিভিন্নতার মধ্যে সহিষ্ণুতা,ভ্রাতত্ব,একাত্মতা,সংস্কৃতি ও লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে জাতি ব্যবস্থার অভিশাপ সত্বেও মানবতার স্বার্থে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যশালী জীবন দর্শন ও সংঘাতের পরিবর্তে মানবন্ধন ভারতকে রবীন্দ্রনাথের ভারত তীর্থ করে তুলেছে।মানুষের ধর্ম ,জাতি,আস্থা,সমাজ,রাজনীতি যাই হোক,মহাত্মা গৌতম বুদ্ধের ধম্ম ও পন্চশীল অনুশীলনে আজ অবধি নানা বিপর্যয় সত্বেও ভারতবর্ষ বেঁচে আছে। ভারতভাগের অত বড় বিপর্যয়ের পরও মানুষ আবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছে বা পারছে।ভূগোল বদলেছে রাজনীতি ও রাষ্ট্রের চরিত্র অনুযায়ী কিন্তু তাতে ভারতবর্ষের মৃত্যু হয়নি।

মায়া,ইনকা,মিশরীয়,রোমান,গ্রীক,মেসাপোটামিয়ার বিপরীতে ভারতবর্ষে মোহনজো দোড়ো হড়প্পার সিন্ধু নগর সভ্যতার পতনের পরও হাজার হাজার বছরের মানববন্ধনই ভারতবর্ষকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে।আমাদের এি প্রজন্ম কি সেই ধারা অব্যাহত রাখতে পারবে,যখন সবকিছুই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে এবং আমরা দ্বংসের মুখোমুখি আজ।দশ দিগন্তে অশনিসংকেত।বিপর্যয়ের মোকাবিলার সমস্থ রাস্তা কিন্তু ভারতবর্ষের ঐতিহ্য রয়েছে।মীডিয়ার রং বেরং খবরাখবরের ফাঁকে আমরা যধি ভারতবর্ষের বিভিন্ন জনগোষ্ঠির ও বিভিন্ন ভাষার লোকসংস্কতিতে প্রাণভরে ডুব দিয়ে চোখ কুলে দেখি,মৃত্যুর মুখোমুখি জিয়নকাঠির সন্ধান না পাওয়ার কথা নয়।আমাদের পুন্শ্চ পুনরূত্থানের মোহ ত্যাগ করে ঐ লোক ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতিকে জীবনযাপনের মূল আধার ও দর্শন মেনে নিয়ে এখনই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় একতাবদ্ধ হতে হবে।

পেরিসে নীস শহরে সন্ত্রাস হামলা,মক্কায় সন্ত্রাস,তুর্কিতে সৈন্য অভিযান পৃথীবীর নানা দেশে যুদ্ধ গৃহযুদ্ধ সেই সোভিয়েত পতনের পর অনিবার্য ঘচনাক্রম,যা ভারতবর্ষেও আমরা আশির ধশক থেকে পান্জাবে,কাশ্মীরে,আসামে,ত্রিপুরায় বার বার দেখেছি।রক্তপাত চলছেই।দশ দিগন্তে মনুষত্বের প্রাণ প্রকতির সমস্ত সম্পদ বিপর্যস্ত এবং লাগাতার লাগাতার নতুন নতুন রক্তনদীর উত্স খুলে যাচ্ছে আর আমরা সেই সমস্ত রক্তনদীর মোহানায় দাঁচিয়ে নিজেদের নিরাপদ মনে করছি।

আমরা বিভিন্ন ভাষায় সারা বিশ্ব জুড়ে আত্মধ্বংসের এই সময়প্রবাহের চাক্ষুস প্রত্যক্ষদর্শী এবং আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন,সেই চেতনা অবলুপ্ত।

ভারতবর্ষ সেদিনও পরাধীন ছিল।ইতিহাসের নিরিখে স্বাধীনতার এই সাত দশক অত্যন্ত ছোট একটি কালখন্ড।কিন্তু পলাশীর যুদ্ধের পর সামন্তবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অখন্ড বাংলাই আদিবাসী কৃষক বিদ্রোহের নিরন্তর যুদ্ধভূমি চুয়াড় বিদ্রোহ থেকে তেভাগা পর্যন্ত।স্বাধীনতার আগে বাংলা এবং পান্জাব স্বাধীনতার জন্য যত রক্ত দিয়েছে,স্বাধীনতার বলিকাঠে যত প্রাণ দিয়েছে,সারা পৃথীবীর ইতিহাসে তার তুলনা নেই।তারপরও মাতৃভাষা ও স্বাধীনতার জন্য দ্বিধা বিভক্ত বাংলাক ওপার যত রক্ত ,যত প্রাণ দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠন করেছে,ইতিহাসে তারও কোনো দ্বিতীয় নজির নেই।

স্বাধীনতার বলি ভারতেভাগের ফলে সেই বাংলা এবং পান্জাব।স্বাধীনতার পর বাঙালি হিন্দু শরণার্থীরা ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে,মাতৃভাষা হারা ,পরিয়হীন বেনাগরিক জীবন যাপল করছেন- এমন মানুষের সংখ্যা পাঁচ কোটি এবং পশ্চিম বাংলায়  নকোটি জনসংখ্যার মধ্যে যারা বাঙালি,তাঁদের অর্ধেকের পরিচয় এখনো বাহাল তকমা ঘুচে গেলে ও সেই উদ্বাস্তু বেনাগরিক।মধ্যপ্রাচ্যে ও আফ্রিকায় যে শরণার্থীর ছল দেখা যাচ্ছে,তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক বাঙালি উদ্বাস্তু এই বাংলায় এবং ভারতবর্ষের প্রায় সব রাজ্যেই নাগরিক ও মনবিক অধিকার,জীবিকা ও নাগরিকত্ব বন্চিত রেল লাইনের ধারে,গ্রাম ও শহরের বাইরে,নদী ও ঝিলের পারে,নগর মহাগরের ফুটপথে কোনো ক্রমে দিন যাপন করছে।

বাংলার বাইরে পাঁচ কোটি ও বাংলায় তিন কোটি এই ছন্নছাড়া ভিটেহারা মুখছাড়া কবন্ধ নামানুষের মহামিছিলে শামিল হওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে বাংলাদেশে এখনো থেকে যাওয়া দু কোটি উনচল্লিশ  লক্ষ মানুষ।

বাংলাদেশর অগ্নগর্ভ অবস্থার উন্নতি না হলে,বাংলা ও আসামে আবার মহাবিপর্যয়।যাদের পুনর্বাসন,নাগরিকত্ব ও সংরক্ষণ আজও হয়নি,তাঁদের সঙ্গে বাংসলাদেশের সংখ্যালঘু যোগ হলে পরিস্থিতি ভারত সরকার,পশ্চিম বঙ্গ,আসাম,ত্রিপুরা সরকার তে বটেই ভারতবর্ষের কোনো রাজ্যের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।

বাংলাদেশ এখন যেভাবে মৌলবাদীদের দখলে,সেই ভাবেই আসমাম বাংলা সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যও দখল করার মরিয়া আত্মঘাতী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক মৌলবাদী সন্ত্রাস বাদী শক্তিগুলো।
সন্ত্রাসের জবাব সন্ত্রাস হতে পারে না।
হিংসার জবাব হিংসা হতে পারে না।
মৌলবাদের জবাব মৌলবাদ হতে পারে না।

ভারতবর্ষের ইতিহাসে বার বার বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে দেশকে বিপদের ,ধ্বংসের থেকে বাঁচিয়ে রাখার অনেক প্রসঙ্গ পাতায় পাতায় আছে।এই ইতিহাসের দৌলতে আজও ভারতবর্ষ বেঁচে আছে।আমরাও বেঁচে বর্তে আছি।ইতিহাসের সেই ধারাকে অব্যাহত রাখতে পারলেই আমাদের সন্তানরা দুধে ভাতে না হোক কোনোক্রমে বেঁচে বর্তে থাকতে পারে।

ভবিষ্যতেে শিশুরা জন্মাবে,তাঁদের জন্যএই পৃথীবীকে আরো সুন্দর করে গড়ে তুলতে না পারলেও,পৃথীবী,ভারতবর্ষ ও সভ্যতা কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য লোকসস্কৃতি ও ইতিহাসের মানববন্ধনকে অক্ষুন্না রাখার কাজটা আমদের করতেি হবে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি না বদলালে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া যতই মজবুত করুন,যতই সীমান্ত সীল করুন,যতই নিরাপত্তা বেস্টনী তৈরি করুন,বাংলাদেশের মরণাসন্ন দু কোটি উনত্রিশ লক্ষ সংখ্যালঘুদের উদ্বাস্তু ঢল নামছেই।

তেমন অবস্থা হলে,পূর্ববঙ্গের মুলনিবাসী দশ কোটিরও বেশি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এই মহাদেশে বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য হোমল্যান্ড ছাড়া কোনো বিকল্প আর থকবে না৤একই সঙংগে হাজার হাজার মরিচঝাঁপির জন্য প্রস্তুত হওয়ার অশনিসংকেত যারা বুঝতে পারছেন না,তাঁরো আদৌ বাঙালি কিনা সন্দেহের অবকাশ থেকে যাচ্ছে।

মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে 5 ই জুলাই কোলকাতায় মিছিল ও বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশান।আমরা ঔদিন দলে দলে রাস্তায় বেরোব।বাংলা,আসাম,ত্রিপুরা ও ভারতবর্ষকে বাঁচনোর তাকীদ যাদের আছে,মনুষত্ব ও সভ্যতার পক্ষে যারা,তাঁরাও ঐ মিছিলে যোগ দেবেন,এই আমাদের আহ্বান।

বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ এবং ভারতবর্ষও নিরাপদ নয়,মানুষ নিরাপদ নয়,সব মানুষই এখন উদবাস্তু।উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান না হলে,যারা এই মুহুর্তে উদ্বাস্তি নন.তাঁদের নিযতিও রবিঠঠাকুর লিখে গিয়েছেনঃ হে মোর দুর্ভাগা দেশ,যাদের করেছো অপমান--

বাংলাদেশ থেকে দু কোটি 39 লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষের ঢল নামতে চলেছে ভারতবর্ষে এবং পরিস্থিতি ক্রমশঃ রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মনুষত্বের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে।

ইজরায়েলর মত বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য অনিবার্য হোমল্যান্ডের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে,আমরা কি চাই?

ধর্ম জাতি রাজনীতির উর্দ্ধে সংযত উদ্বাস্তু আন্দোলন সংগঠিত করা বেঁচে থাকার একমাত্র রাস্তা!

ভারত সরকারে নিযন্ত্রেণের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিশ্তি ক্রমশচ যেমন ইতি মধ্যে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সংঘটিত গুলশান ও কিশোরগঞ্জের  জঙ্গি হামলার ঘটনায় বিদেশিসহ ৩০ জন নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল ঢাকা পৌঁছান। তিনি রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াই এ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রস্তাব নিয়ে আসেন।  

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে সরকারের অস্বীকৃতির কারণে দেশকে আরো চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান। অন্যদিকে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য গঠনে সরকার সায় দিচ্ছে না বলে অভিযোগ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহের।
বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহ বলেন, যারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসেছে তাদের দ্বারা জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদ নির্মূল সম্ভব নয়।গুলশানের ঘটনা দিয়ে প্রমাণ হয়েছে সেনাবাহিনী বাদে অন্য কোন বাহিনী সন্ত্রাস দমন করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে বেগম জিয়া জঙ্গিবাদ নির্মূলে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যের ডাকে সরকারের সম্মতি দেয়ার দায়িত্ব থাকলেও তারা তা করেনি। বরং ঐক্যের ডাক নিয়ে সরকার এখন উপহাস করছে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস রুখতে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়ে গেছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গুলশান হত্যাকাণ্ডে এমন সব তথ্য আসছে যা তাজ্জব হওয়ার মতো। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারের তৈরি ভাবমূর্তি গুলশান হত্যাকান্ডের কারণে ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গোলিয়ায় সফর নিয়ে রবিবার বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স অবস্থানের কথা আসেম নেতাদের কাছে পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানান তিনি। তুরস্কের জনগণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, নিজের জীবন হুমকিতে রেখেও গুলশান হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
নিশা দেশাই ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এ প্রসঙ্গে সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি বৈঠকে নিশা সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সে সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। নিশা দেশাই বাংলাদেশকে জানিয়ে গেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশী দৈনিক জনকন্ঠের খবরঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের সঙ্গে ঐক্য করলে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা যাবে, সেই জনগণের সঙ্গে ইতোমধ্যেই জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। দেশের জনগণই বিপথগামীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করবে। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীÑ তাদের কথা আলাদা। তারা সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়তে চায়। তিনি ধর্মের নামে যারা তরুণদের জঙ্গীবাদে উস্কানি দিচ্ছে, অর্থ-অস্ত্র দিচ্ছে, মদদ দিচ্ছেÑ তাদের খুঁজে বের করতে দেশবাসীসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান।
রবিবার বিকেলে গণভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সরকারের অনুসৃত ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, জঙ্গীবাদ এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা নিরলসভাবে সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু গুলশানে হামলার ঘটনা আমাদের কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুণœ হয়েছেÑ এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।’ গুলশানে হামলার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই জঙ্গী হামলার ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। কিছু সময় অপেক্ষা করুন। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলাও যায় না। তবে যে তথ্য আসছেÑ তাজ্জব হয়ে যাওয়ার মতো। তদন্ত শেষে সবকিছু বুঝতে পারবেন সবাই।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে বেশি খোঁচাখুঁচি না করার জন্যও আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মূল চিন্তা-চেতনার উৎস খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে জঙ্গী ও সন্ত্রাসের মদদদাতা, অর্থদাতা, প্রশিক্ষণদাতা, যারা পরামর্শ দিচ্ছে বা অস্ত্র সরবরাহ করছে তাদের খুঁজে করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আতঙ্ক সৃষ্টি করাই ছিল গুলশানে হামলার উদ্দেশ্য। তবে মানুষের জীবন চলমান, জীবন থেমে থাকে না।
যারা ধর্মের নামে তরুণদের জঙ্গীবাদে জড়াতে উস্কানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সন্ত্রাসবিরোধী, জঙ্গীবাদবিরোধী। বাংলাদেশের মানুষকে সব সময় এর বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যাদের কোন অভাব নেই, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, তারাই এখন জঙ্গীবাদে জড়াচ্ছে। যেখানে তাদের কোনকিছুই অপূরণীয় থাকে না, সেখানে কেন তারা এটা করছে! তারা এখন বেহেশতের হুর-পরী পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে জঙ্গী কর্মকা- চালাচ্ছে তাদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা খোলে না। যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে তারা কোনদিনই বেহেশতে যেতে পারবে না। তবে কারা এসব তরুণকে মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করছে, পেছন থেকে উস্কানি দিচ্ছে, জঙ্গীবাদে মদদ দিচ্ছেÑ এদের খুঁজে বের করতেই হবে। এই তরুণদের কারা অস্ত্র দিচ্ছে, কারা অর্থ যোগাচ্ছে, তাদের তথ্য সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, সেদিন বেশি দূরে নয়, দেশের সব মানুষ এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে সাম্প্রতিক এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নগুলো ঘুরেফিরেই আসে সম্প্রতি গুলশানে জঙ্গী হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গেই সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এছাড়াও সরকারের একাধিক মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই এ হামলা ॥ আরও হামলা হতে পারেÑ প্রধানমন্ত্রীর এমন সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক জানতে চান এ বিষয়ে সরকারের কাছে কোন তথ্য আছে কিনা? জবাবে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গীবাদকে একটি বৈশ্বিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, একবার যখন ঘটেছে, এরা তো বসে থাকবে না। ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। তবে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ অত্যন্ত কঠোরভাবে দমনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে।
তিনি বলেন, হামলার কয়েক দিনের মধ্যে সারাদেশে জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এমন জাগরণ সৃষ্টি পৃথিবীর কোন দেশই করতে পারেনি। মাত্র দুই দিনে আটটি বিভাগের ৬৪ জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে আমি টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছি। সারাদেশের গ্রামপর্যায় পর্যন্ত জঙ্গীবাদবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি দেশের জনগণই বিপথগামীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বমন্দার মধ্যেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগ থেকে ৭ ভাগে উন্নীত করেছি। শুধু ব্যক্তিস্বার্থের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু সততার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছি বলেই আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আমরা যখন সম্মানজনক অবস্থানে এনেছি, বাংলাদেশ যখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে, ঠিক তখনই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই গুলশানে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সব সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চলবে এটা যারা চায়, কিছু পদলেহনকারী ও চাটুকাররা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে চায়, যারা চায়নি ২০১৪ সালের নির্বাচন হোকÑ তারাই নানা কর্মকা- ঘটাচ্ছে। আগে সারাবিশ্বের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারতাম। এটা যাতে না পারি সেজন্যই গুলশানের জঘন্য ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা দেশকে যে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেখানে এ ঘটনা ঘটিয়ে যেন একটা ছেদ এনে দিল।
জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে ॥ গুলশানে হামলার পর কিছু রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ একতাবদ্ধ হয়েছে। জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামে গ্রামে কমিটি হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছে। এখন ঈদের নামাজে সনাতম ধর্মের যুবকরা পাহারা দিচ্ছে। এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য অভূতপূর্ব অর্জন। বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীÑ তারা ছাড়া দেশের জনগণ জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়িয়েছে। কিছু পক্ষ আছে তারা সর্প হয়ে দর্শন করে ওঝা হয়ে ঝাড়তে চায়।
জঙ্গী হামলা নতুন নয় ॥ অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানের জঙ্গী হামলা বাংলাদেশে নতুন নয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার শিকার আমি নিজেই হয়েছি। ’৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকেই আমার ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে। গাড়ি চালিয়ে ফ্রান্সে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা আমাদের দেশেও হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে আমাদের মিছিলের ওপর গাড়ি চালিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এরশাদ সরকারের আমলেও ট্রাক তুলে দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ‘মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী’, ‘বৃষ্টির মতো গুলি কর’Ñ প্রকাশ্য এ স্লোগান দিয়ে কারা আওয়ামী লীগের মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ করে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল, সে কথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। নির্বাচন প্রতিহত এবং অবরোধের নামে প্রকাশ্য পেট্রোলবোমা মেরে পুড়িয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গীর্জা সবখানে হামলা চালানো হয়েছে, কোরান শরিফ পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা। আমরা সবকিছু মোকাবেলা করেই দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির সোপানে নিয়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনই আবারও গুলশানে হামলার ঘটনা হলো। তবে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ মোকাবেলা করতে যা যা করার সরকার থেকে তার সবই করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানে হামলার পর বিশ্বের অনেক দেশই আমাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, অনেক উন্নত দেশও জঙ্গীবাদের হামলায় আক্রান্ত হচ্ছে। সেজন্য এ সমস্যা মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশকেই একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছি। কারণ এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারা জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করছে, অস্ত্রের ডিলার কারা, কারা মদদ দিচ্ছেÑ সবকিছুই সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে।
ভারতীয় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গুলশানে হামলার পর আমরা সম্মান হারাইনি। ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আমার কষ্ট লেগেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে যখন সবদিক থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছিÑ তখনই এ হামলা চালিয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার চেষ্টা করা হলো। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সারাদেশেই প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করছি। দেশের কোন মানুষই জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ দেখতে চায় না। এর বিরুদ্ধে সারাবিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। শুধু নাড়া দিচ্ছে না মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী, যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের বিবেককে। তাই কারা এসব ঘটাচ্ছে, কাদের সন্তানরা বিপথে পা দিচ্ছে, তা জনগণের সচেতনতার মাধ্যমেই খুঁজে বের করা হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের সকল মানুষকে একত্রিত ও তাদের চেতনাকে জাগ্রত করতে পেরেছি, যা বিশ্বের অনেক দেশই পারেনি। তবে দুঃখ লাগে একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে কিভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। জঙ্গী বানায়। তদন্ত প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু ঘটলে কী এত দ্রুত সবকিছু তদন্ত শেষ করা যায়। আমি নিজেই তো ভুক্তভোগী। বাবা-মা, ভাই, পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার পাওয়ার জন্য আমাকে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখনকার মতো তখন তো অনেককে এজন্য এত সোচ্চার হতে দেখিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে একে সব হত্যাকা-ের বিচার করছি।
আলোচনা ও ঐক্য হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হবেÑ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) সঙ্গে আলোচনা করলে সব সন্ত্রাস-জঙ্গী হামলা বন্ধ হবে, না করলে তারা এসব কর্মকা- চালিয়েই যাবেনÑ এটাই কী তারা বলতে চাচ্ছেন? অনেক শীর্ষ জঙ্গীদের বিচার বছরের পর বছর আটকে থাকা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ফাঁসির দ-প্রাপ্ত শীর্ষ জঙ্গীর বিচার ঝুলে আছে, এটা সত্যিই দুঃখজনক। এদের বিচার হলে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হতো। এখন যারা এসব কর্মকা-ে জড়িত তারা বুঝতে পারতÑ এসব করলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি তাদেরও হতে হবে।
ওদেরকেও খুঁজছে পরিবার
নতুন সাত নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চেয়েছে তাদের উৎকণ্ঠিত পরিবার। এরমধ্যে তিনজন নারী ও চারজন পুরুষ। গুলশানে হামলাকারীদের কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ থাকার পর জঙ্গি তত্পরতায় জড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে এই সা
DESH-BD.NET
আ.লীগের দু'গ্রুপে গোলাগুলি, বোমায় বোমায় রণক্ষেত্র ঈশ্বরদী

ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় গোলাগুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও ব্যাংক রোস্তরাঁয় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা পৌর এলাকা। রোববার বিকে
ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় গোলাগুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও ব্যাংক রোস্তরাঁয় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা পৌর এলাকা। রোববার বিকে
DESH-BD.NET
14 hrs ·
‘সরকারি খুতবা’ প্রত্যাখ্যান করলো হেফাজত, কড়া ভাষায় প্রতিবাদ
চট্টগ্রাম ইসলামিক ফাউন্ডেশন আহুত দেশব্যাপী জুমার নামাযের খুতবা প্রত্যাখ্যান করেছে ঈমান-আক্বীদাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এ খুতবাকে ধর্মীয় বিষয়ে সরকারের অবৈধ হস্ত
DESH-BD.NET




'মেয়ে আমাকে বলেছিল, জঙ্গি কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রুপ সিটিং হয়'
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কথা মেয়ের মুখে শুনলেও…
TAZA-KHOBOR.COM|BY TAZAKHOBOR : NEWS UPDATE

জঙ্গিবিরোধী সভা করে ফেরার পথে সাবেক এমপির গাড়ি ভাঙচুর
জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠনে মতবিনিময় সভা করে ফেরার পথে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আনোয়ারুল হকের গাড়ির ওপর হামলা করা হয়েছে। এতে গাড়ি…
DESH-BD.NET




No comments:

Post a Comment