Sunday, July 28, 2013

বিরোধী-শূন্য বিধানসভায় একবেলাতেই বাজেট পাশ

বিরোধী-শূন্য বিধানসভায় একবেলাতেই বাজেট পাশ

সময়: বিচিত্র এবং বেনজির৷

মাত্র একবেলার অধিবেশনেই কি না পাশ হয়ে গেল রাজ্য বাজেট! শনিবার বিধানসভায় এমন আজব কাণ্ডই ঘটল৷ বাকি সব দপ্তরের বাজেট গিলোটিনে তুলে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছিল অবশ্য আগেই৷ কিন্ত্ত সেই স্বাস্থ্য-বাজেটের আলোচনাতেও গরহাজিরই রইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কেন নিজের দপ্তরের বাজেট-বিতর্কেও মুখ্যমন্ত্রী হাজির নন, কেন স্বরাষ্ট্র কিংবা পঞ্চায়েতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের বাজেট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না, আইনশৃঙ্খলা এবং হিংসার ঘটনাবলি নিয়ে কেন মুলতুবি প্রস্তাবের আলোচনা হচ্ছে না--পরের পর প্রশ্ন তুলে প্রথমে অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করে বামেরা৷ তাদের আনা মুলতুবি প্রস্তাব গ্রহণ না-করায় পরে ওয়াকআউট করে কংগ্রেসও৷ ওয়াকআউটে সামিল হয় এসইউসি-ও৷ ফলে একবেলার এই নাম-কা-ওয়াস্তে অধিবেশনের সিংহভাগ সময়েই বিধানসভা ছিল বিরোধী-শূন্য৷

মুখ্যমন্ত্রীর গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বামেরা ওয়াকআউট করার পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী সভায় আসেন৷ রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সভায় বক্তব্যও রাখেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্ত্ত ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরা ছাড়া তখন সে-সব শোনার মতো কেউই ছিলেন না সভায়! একদিনের নামমাত্র অধিবেশনের পক্ষে সাফাই দিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্যই এই পরিস্থিতি৷ লোকসভাতেও একদিনের এমন অধিবেশন ডেকে বাজেট গিলোটিনে পাঠানোর দৃষ্টান্ত রয়েছে৷' কিন্ত্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়? প্রবীণ বিধায়করাও এমন নজির মনে আনতে পারছেন না৷ বিকল্প যে ছিল, তারও যুক্তি দিচ্ছেন তাঁরা৷ আপত্‍কালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় আপাতত ভোট অন অ্যাকাউন্ট পাশ করিয়ে ফের অধিবেশন ডেকে বাজেট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যেত এবং সেটাই উচিত ও গণতন্ত্রসম্মত হত বলে মত বিরোধীদের৷

বিরোধী শূন্য সভায় স্বাস্থ্য-বাজেট পেশ করেন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ জবাবি ভাষণে (যখন কক্ষে শুধুই শাসক-শিবির) তাঁর দাবি, 'রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর হাসপাতালে ১০ হাজার শয্যা বেড়েছে৷ আরও ১৪ হাজার শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে৷' এই মুহূর্তে রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে সব মিলিয়ে ৫৯ হাজার শয্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি৷ যদিও তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কোন কোন হাসপাতাল মিলিয়ে ১০ হাজার শয্যা বেড়েছে, জানাননি তিনি৷ শয্যা-বৃদ্ধির দাবি ছাড়াও রাজ্যে ৩৪টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হচ্ছে এবং পঞ্চায়েত ভোটের ফল-ঘোষণার পরেই টেন্ডার ডাকা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী৷ উলুবেড়িয়ায় 'মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব' হবে, আরও ৫২টি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান হবে--এ রকম কিছু ফিরিস্তিও পেশ করেন৷

No comments:

Post a Comment